আজকাল অনেকেই লক্ষ্য করেন, শুধু মানসিক চাপ বা টেনশনই শরীরে জ্বরের মতো প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করতে পারে। একটানা চাপ, কাজের চাপ বা ব্যক্তিগত উদ্বেগ শরীরের প্রতিরোধ ক্ষমতাকে প্রভাবিত করে, যার ফলশ্রুতিতে শরীর রোগ প্রতিরোধে দুর্বল হয়ে যায়।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, মানসিক চাপ বা স্ট্রেস হলে শরীরের ‘স্ট্রেস হরমোন’—যেমন কর্টিসল ও অ্যাড্রিনালিন—বেশি নিঃসৃত হয়। এই হরমোনগুলো ইমিউন সিস্টেমকে সাময়িকভাবে দুর্বল করে দেয়। ফলে, ভাইরাস বা ব্যাকটেরিয়ার সংক্রমণের বিরুদ্ধে শরীর কম প্রতিরোধ করতে পারে এবং জ্বর বা সর্দি-কাশি মতো উপসর্গ দেখা দিতে পারে।
এছাড়া, চাপের সময় শরীরের তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণও প্রভাবিত হয়। স্ট্রেস নিউরোট্রান্সমিটার এবং হরমোনগুলো শরীরের সেন্ট্রাল থার্মোস্ট্যাটকে সক্রিয় করে, যার ফলে তাপমাত্রা সাময়িকভাবে বৃদ্ধি পেতে পারে। তাই টেনশনেই কখনো কখনো জ্বরের মতো অনুভূতি হয়।
মনোবিজ্ঞানীরা বলেন, টেনশনজনিত জ্বর মূলত ‘সাইকোসোম্যাটিক প্রতিক্রিয়া’। এটি মানসিক উদ্বেগের কারণে শরীরিক উপসর্গ দেখা দেওয়ার প্রক্রিয়া। মানসিক চাপ দীর্ঘসময় ধরে থাকলে, শুধু জ্বর নয়, মাথা ব্যথা, পেটের সমস্যা, ঘুমের সমস্যা এবং ক্লান্তি-ও বাড়তে পারে।
এমন পরিস্থিতিতে বিশেষজ্ঞরা পরামর্শ দেন, নিয়মিত মেডিটেশন, হালকা ব্যায়াম, পর্যাপ্ত ঘুম এবং বিশ্রামের মাধ্যমে স্ট্রেস কমানো। এছাড়া পুষ্টিকর খাবার এবং পর্যাপ্ত পানি পান ইমিউন সিস্টেম শক্ত রাখতে সাহায্য করে।
চিকিৎসকদের মতে, টেনশনজনিত জ্বর সাধারণত স্বল্পস্থায়ী। তবে যদি জ্বর দীর্ঘস্থায়ী হয় বা অন্যান্য উপসর্গ—যেমন শ্বাসকষ্ট, জ্বর বেশি থাকা বা শরীরের ব্যথা—থাকে, তাহলে অবশ্যই ডাক্তারের পরামর্শ নিতে হবে।
