চলতি বছরের ২১ অক্টোবর পটুয়াখালীর দশমিনা উপজেলার চরবোরহান ইউনিয়নের ৯ নম্বর ওয়ার্ডের উত্তর চরশাহজালাল গ্রামে পানিতে ডুবে রাফি নামে চার বছরের এক শিশুর মৃত্যু হয়েছে। রাফি ছিল স্থানীয় সিদ্দিক বেপারী ও শারমিন বেগমের একমাত্র ছেলে।
রাফির বাবা সিদ্দিক বেপারী জানান, “সবার অগোচরে খেলা করতে গিয়ে রাফি বাড়ির পাশের পুকুরে পড়ে যায়। অনেক খোঁজাখুঁজির পর কয়েক ঘণ্টা পর ওই পুকুর থেকে রাফির মরদেহ উদ্ধার করা হয়। এ ঘটনায় পুরো গ্রামে শোকের ছায়া নেমে আসে।” একমাত্র সন্তানকে হারিয়ে মা শারমিন বেগম বর্তমানে পাগলপ্রায় অবস্থায় রয়েছেন।
এই শিশুর মতো পটুয়াখালীর দশমিনা উপজেলায় গত দেড় বছরে পানিতে ডুবে মোট ৩৬ শিশুর মৃত্যু ঘটেছে।
উপজেলা স্বাস্থ্য বিভাগের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, ২০২৪ সালের জানুয়ারি থেকে চলতি বছরের অক্টোবর পর্যন্ত উপজেলায় ৬৭ শিশু পানিতে পড়ে। এর মধ্যে দ্রুত উদ্ধার ও চিকিৎসার ফলে ৩১ শিশু বেঁচে গেলেও ৩৬ শিশুর মর্মান্তিক মৃত্যু হয়।
চরবোরহান ইউনিয়নের প্যানেল চেয়ারম্যান মো. ফরহাদ আকন বলেন, “উপকূলীয় নদীবেষ্টিত এই অঞ্চলের প্রত্যন্ত গ্রামগুলোতে প্রায় প্রতিটি বাড়ির পাশেই পুকুর খনন করা হয়। পরিবারের সদস্যরা ব্যস্ত বা বিশ্রামে থাকলে শিশুরা খেলতে গিয়ে অজান্তেই পানিতে পড়ে যায়, যার ফলে প্রাণহানি ঘটে।”
দশমিনা উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, “পানিতে ডুবে শিশু মৃত্যুরোধে অভিভাবকদের সচেতনতার বিকল্প নেই। শিশুদের অল্প বয়সেই সাঁতার শেখানো গেলে এ ধরনের দুর্ঘটনা অনেকটাই কমানো সম্ভব।”
